DEHLIJ

মুকুরদীপি রায়

 অবলম্বন

 


প্রথম পর্ব।

                        ১৪ ই ফেব্রুয়ারি।

মুগ্ধা,

 ক্লান্ত বিকেলে হোস্টেলে ফেরার আগে তোমার নিমন্ত্রণ পত্র টা দেখলাম ।ফেসবুকে আজকাল হাজার ফ্রেন্ডস । এর থেকে ওর বন্ধু। ওর বন্ধু থেকে তার । কেউ কাউকে না জেনে!!এই করে 'সম্পর্ক ভুলে যাওয়া সম্পর্কটা'একটা জায়গায় এসে দাঁড়ায় "বন্ধু" নামে।  তাই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করা। তোমার কেস টা একটু অন্যরকম। নামটার সাথে আমার মনের আনাগোনা। শুরু হলো। প্রথম দর্শনে ।তোমার ফেসবুক প্রোফাইল টা না ঘেঁটে, সোজা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্টড। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করবো না কি করে আবিষ্কার করল আমাকে এই বিশাল বিশ্বভুবনে! বরং জিজ্ঞেস করবো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট টা  ভুল করে , করে ফেলা নয় তো ?অথবা ফেসবুক ম্যানেজমেন্টের কারসাজিতে? আনওয়ান্টেড? কী হয় জানো, মনটা যখন ভরে থাকে সবগুলো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট  টিক করে দিই। নইলে সব গুলো ক্যানসেল! এতগুলো মানুষ কে ফ্রেন্ড তালিকায় ঢুকিয়ে লাভ কী!!   বেশিরভাগই চেনা চেনা অথবা চেনা মুখ অচেনা মানুষের মতো! ঠিক বুঝতে পারি না এরকম বন্ধুত্বে মজাটা কি? মনের কথা তো বলা যায় না বরং ফর্মালিটি! সবটাই। অবশ্য নিজের কোন সাফল্যে কেউ দুটো তিনটে থাম্ব  দেখিয়ে দেয় থামস আপ এর ভঙ্গিতে। এতে মনটা খুশি হয়ে যায় ।হঠাৎ করে। তাই বুঝি এত করে লাইক দেখা ।কমেন্ট হলে আরো ভালো। "ভালো শব্দ "গুলো যাদুকরের মত। কারণে-অকারণে ভেতরটা ভরিয়ে দেয় মুহূর্তে। তোমার নাম টা র মত। মুগ্ধা।যে মুগ্ধ করে তোলে মনটাকে সেইতো মুগ্ধা।  সার্চে তোমার নামটা টাইপ করলাম ।মুখটা দেখলাম না।দেখলাম মনটাকে। এতো সুন্দর ফুলটা লাগিয়ে রেখেছো সেখানে! গাছটা ও। "গন্ধরাজ"। আমার ও বড় কাছের। মনটাকে টানে হিচড়ে হিচড়ে! আইডিয়াটা খারাপ নয়। নিজেকে না দেখিয়ে ছবিতে তুলে ধরা  মনটাকে।এটাই করেনা লোকজন সচরাচর। সবচেয়ে সুন্দর ফটো ফেসবুকে পোস্ট করে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে লাগিয়ে রাখে। নিজেকে সুন্দর করে দেখানোর চেনা পরম্পরা! অবশ্য শব্দের থেকে সৌন্দর্যের ভ্যালু এ দুনিয়ায় বেশি ।অনেক গুণ ।আপাতত লোকে তাই মানে। আমি কিন্তু বিপরীতের দলে। জন্মের সময় সকলের মুখে তুলে বলে, বাপের মত হয়েছে। মনে মনে বলে, বাপরে পুরো বাপের মত কালো ।

তবে আমার ধারণাটা কিন্তু অন্য। কলোর ও একটা সৌন্দর্য থাকে। সেটা ধরা পড়ে তাদের কাছে,  যাদের রেটিনায়   রড ও কোণ সেল দুটোই বেশি থাকে ।তবে সেটা খুবই কম জনের।জ্বলজ্বলে তারার মত। হাজার  নক্ষত্রের ভিড়ে ই এত আলাদা লাগে। কয়েকটা কে। ঠিক তোমার  'গন্ধরাজ' এর মত। নামটাও। আজ এই পর্যন্ত ।নিজের ভালোলাগার সাথে সাথে অপরের ভালোলাগা টার গুরুত্ব বেশি দিই বলে । অপেক্ষায় রইলাম উত্তরের।


আবির।


অবলম্বন -দ্বিতীয় পর্ব

                           16 ই ফেব্রুয়ারি 

আবির

 সম্পর্কের সৌন্দর্যটা আমিও উপভোগ করি। ভালো সম্পর্ক দুনিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। আমিও মানি। এই দেখো না তোমাকে না জানি। না চিনি।তবু  এমন করে লিখছি যেন আমাদের জানাশোনা অনেক কাল! এটাই বা কম কি! তুমি কোথায় থাকো আমি জানিনা। কিংবা কী করো! তবে আন্দাজ করতে পারি। গন্ধ শুঁকে ।আমার গন্ধরাজের মত। ফেসবুকে সাজান। তবুও কি গন্ধ ছাড়ে না কোন? 

আর এটাই জীবন। বেশিরভাগই মনের কেরামতি ।মনটা আমাদের একটা বিউটিফুল বাগানের মত। আর আমাদের ভাবনাগুলো এক একটা দানা। একই বাগানে ওই দানা দিয়ে ফুল ফোটাতে পারি শতশত ।অথবা বিচুটির জঙ্গলে ও ভরিয়ে দিতে পারি। আসলে সবকিছু আমাদের মনে। অল আর মাইন্ড গেম। তবে মন টাকে কন্ট্রোল করা এতকি সহজ? ভালো লাগছে তোমার সাথে আলাপ হয়ে ।একটা ভালো বন্ধু নাকি একটা লাইব্রেরির সমান। কথাটা আমি মানি। ক্লান্ত বিকেলে তুমি হোস্টেলে ফেরো আমি ও। হোস্টেলে ফিরতে যদিও আমার  সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। কাজটা আমার এমনই। তবে দুজনে হোস্টেলে ফিরি! এটা কি কম সিমিলারিটি!! আজ রাখি। আবার মনে হলে !

মুগ্ধা


১৭/২

মুগ্ধা,

তোমার লাস্ট শব্দ টা কানে বাজে। "আজ থাক ।আবার মনে হলে" ।এটা ঠিক বলেছ। আমিও মানি সত্যটা। বডি মাইন্ড কো রিলেশন ।মনের সাথে  বডির ম্যাচ না হলে আমরা ইফেক্টিভ কিছু করে উঠতে পারিনা। সকলের হাতে একই সময়। একদিনে ২৪ ঘন্টা। কেউ এরমধ্যে ১২ ঘন্টা কাজ করে। কেউ ৬ ঘন্টা। কারণটা কি জানো?অনেক সময় মন পারমিট করে  তো বডি করে না ।আবার বডি পারমিট করে তো মন  না ।এজন্য আমাদের সময় হয় না। আসলে সময় আমাদের হাতে অনেক। তুমি কি বলো? অনেক জ্ঞানগর্ভ কথা হয়ে গেল না? একচুয়ালি body-mind co relation আমাদের জীবনের এক ইম্পর্টেন্ট পার্ট।এটা ঠিক করে শিখে নিলে জীবনে সময়ের অভাব হয় না!

 আমি যাকে গুরু মানি, মানে আমার  আদর্শ যে মানুষটা, কী বলে জানো? যারা নাকি কোয়ালিটি কাজ করে তাদের সময়ের অভাব হয়না কখনো। পরে বলব এই মানুষটার কথা। তোমার কি মনে হয় না আমাদের একজন মানুষকে ফলো করে চলে দরকার ।লক্ষ্যে পৌঁছানোর রাস্তা পের হতে? তা তোমার লক্ষ্য কি জানতে পারি? আমরা পরস্পরকে হেল্প করতে পারি। তুমি কী বল? সময় করে লেখো।


আবির।


১৮/২


আবির ,

তুমি ঠিক বলেছ ।সময় আমাদের হাতে অনেক ।একদিনে ২৪ ঘন্টা। তবুও সময়ের অভাব!!যদিও আমরা সবসময় বলতে থাকি এখন বিজি। একচুয়ালি কি জানো।busy is a relative  word।it's all about priority। "প্রায়োরিটি" তুমি কী বলো ?

আমি তোমাকে লিখছি সময় বের করে! যদি ভালো না লাগতো তোমার লেখার ধরন ,আমি চুপ করে থাকতাম ।অথবা লিখে পাঠাতাম আইএম বিজি ।প্লিজ আন্ডারস্ট্যান্ড।  ফ্রিকুয়েন্সি না মিললে  অটোমেটিক সম্পর্কটা মুছে যায় ।অস্তগামী সূর্যের মতো। সমুদ্রের তলায় ।

একজনের কাছে মনের কথা খুলে বলে বললে মনটা রিলাক্স ফিল করে ।এইজন্য দেখনা লোকে ডায়েরী লেখে। বন্ধু খোঁজে মনে মনে। আর না পেলে ঠাকুরের কাছে হাতজোড় করে বিড়বিড় করে ।এক একটা অবলম্বন।

 খুব কম মানুষ একা একা কমপ্লিট হতে পারে। নিজেকে নিজে কোশ্চেন করলে উত্তরটা পাওয়া যায় ।এম আই রিয়েলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট? আসলে মেন্টাল হেলথের ডেফিনেশন এটলিস্ট  তাই বলে। সেল্ফ কনফিডেন্স ইজ দা মোস্ট ইম্পরট্যান্ট পার্ট টু বি হেলদি মেন্টালি। এছাড়াও মেন্টাল হেলথের  অনেকগুলো প্যারামিটার আছে। একে একে বলবো ।ক্রমশ প্রকাশ্য!! ভালো থেকো।

মুগ্ধা।



অবলম্বন -তৃতীয় পর্ব

                         ২০ফেব্রুয়ারি 

মুগ্ধা ,

পুরো একদিন সময় নিলাম তোমাকে বুঝতে। গেল চিঠিতে তুমি মেন্টাল হেলথ নিয়ে লিখেছ। এতে বুঝেছি তুমি যে কোনভাবেই হোক মেডিকেল লাইনে যুক্ত। আর তোমার কথার ধরনে বুঝতে পারি যে তুমি প্রফেশনে বেশ পোক্ত ।আমি আবার তোমার  উল্টো প্রফেশনে। তবে স্ট্যাটিসটিকস টা জানি প্রয়োজনে। ভাবলে অবাক লাগে। এ পৃথিবী র  চারজনের মধ্যে একজন কোনো না কোনোভাবে মানসিক রোগে ভোগে। ডিপ্রেশন টা মোস্ট কমন মেন্টাল ডিসঅর্ডার। অ্যাপার্ট  ফ্রম এনজাইটি।

 ইন্ডিয়াতে প্রতি ২০ জনের মধ্যে এক জন ডিপ্রেশনে ভোগে। মাঝে মাঝে আয়নার সামনে নিজেকে জিজ্ঞেস করি আর ইউ অলরাইট আবির? ভয় হয় অজান্তে না নিজেই ও ই দলে ঢুকে পড়ি!!লোকের সাথে  interact করলে মনে হয় হয় ও পাগল নয় আমি!! এজন্যই তো মনে মনে ঠিক করি বন্ধুত্ব টা লিমিটেড রাখা ভালো। মন না মিললে দূরে থাকো। অকারনে chaos কেন ?তার থেকে নির্জনে পাখির কিচির-মিচির শোনা ভালো। আমিও কনফিউজড ।প্রতিটি স্টেপে লোকে এত জ্ঞানের কথা বলে। আমি সিম্পিল থিওরি মানি। অভ্যাস, ব্যবহার সহজ জ্ঞান টা ঠিক করো ।সুখের অভাব হবেনা কোন। আর মন দিয়ে নিজের কাজটা করে দাও, দেখবে না চাইতে সব কেমন এক একে উড়ে এসে জুড়ে বসে তোমার চারপাশে। আজ মনে হয় অনেক জ্ঞান দিলাম। আসলে এগুলো সব আমার গুরুর কাছে শেখা। আমার গুরু কী বলে জানো? যে কোনো কাজ যদি বডি মন আর সোল ঢেলে করো দেখিতো কার সাধ্য আটকায়া কাকে!! আমিও এই মন্ত্রে দীক্ষিত। যদি কিছু করি ভেতর থেকে করি। না করলে হাত দেওয়া নয় ।এতেই তো মিরাকেল টা ঘটে। শচীন তেন্ডুলকর কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলী কী জানত এত বড় ক্রিকেটার হবে একদিন !অথবা এমএস ধোনি কি কল্পনা করেছিল ওর হাতেই দুটো  বিশ্বকাপ আসবে! আসলে নিজের কাজটাই ওরা ঠিক ঠাক করে। তাই সাফল্য উড়ে উড়ে ওদের হাতে ধরা পড়ে। তোমার কী মত জীবন নিয়ে? জীবনটা কেমন হওয়া উচিত অথবা কেমন কাটালে বেটার লাইফ lead করা যায়? আসলে অধিকাংশ মানুষ জীবিকার জন্য এত কিছু করে জীবনের জন্য নয় ।আমার তো সোজা হিসাব ।হাফ হাফ টাইম জীবিকা অর্জনের জন্য আর জীবনের জন্য। নিজের যা ভালো লাগে ওটা করবো নিয়ত মন দিয়ে। Violin বজাবো। সুরের পর সুর তুলে। জীবনটাকে তিলে তিলে, ছন্দে ছন্দে নাচাবো। জীবনটা কী করে কথা না মেনে চলে দেখি!

 আজ অনেক কথা বললাম ।যেটা মনে র ভিতর থেকে এলো। তবে বেকুবি গুলো নয়। ভালো থেকো। পরের mail এর অপেক্ষায়।

আবির।



                                    ১লা মার্চ

 আবির,

 ইচ্ছে করে লিখিনি কদিন ।

তুমি তো আর একটা লিখতে পারতে! জানো ,যে দেয় তার আনন্দ বেশি গ্রহীতার থেকে। ভেবেছিলাম তুমি আর দশটা ছেলের মত। কদিন চুপ করে আবার ছটফট করবে। তা নও তুমি। তোমার এত গভীরতা। তাই বুঝে উঠি কম!  হয়তো সমুদ্রের মতো।  ভিতরের উথলে ওঠা ঢেউ দেখায় না সহজে। তরঙ্গ বইতে  থাকে তীরের দিকে ।তুমিও তাই দেখলাম ।তোমার গেলো mail টা বেশ মজার। অভ্যাস ব্যবহার টা না হয়  বুঝি কিন্তু সহজ জ্ঞান টা  কী রকম শুনি? তুমি বলেছ বন্ধুত্বটা লিমিট থাকা উচিত। আমিও মানি এ কথা। জানো  মেয়ে হলে অটোমেটিক বন্ধুর সংখ্যাটা কম হয় ।তোমার স্ট্যাটিস্টিক টা খুললে বুঝতে পারবে। মেয়েদের গণ্ডিটা কেমন সংকীর্ণ!!সমাজের আবরণে। মেয়েদের খোলামেলা হওয়াটা এখনো পর্যন্ত সমাজ ভালো চোখে দেখেনা। বলে,মেয়ে হয়ে এত লাফালাফি করা ঠিক নয়। ছেলেদের হাজারটা মেয়ে বন্ধু থাক তাতে দোষ নেই।  কিন্তু একটা মেয়ের দু একটা ছেলে বন্ধু থাকলে সমাজ চোখ  উঁচিয়ে বলে,   মেয়ে টার স্বভাব ভালো নয়। বাংলার বাইরে আছি ভাগ্যিস।  এখানে মেয়েদের স্বাধীনতাটা বেশি। নিজের মত এনজয় করি। তবে হ্যাঁ তোমার লেখা থেকে বুঝতে পারি ,তুমি হও তুমি ইকোনমিকস অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাথে যুক্ত। এম আই রাইট?


 মুগ্ধা।



অবলম্বন ।চতুর্থ পর্ব

১লা মার্চ।

  মুগ্ধা,

তুমি ছোট করে লেখো।কিন্তু খুব সাজানো-গোছানো ।তোমার স্টাডি রুম  টার মত ।এবার ঝটপট উত্তর দিচ্ছি। পিছনের কথা ভেবে।

 অ্যাকচুয়ালি আমি কতগুলো প্রিন্সিপাল মেনে চলি ।সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট জিনিস টা কী জানো? নিজেকে সংযত রাখা। নিজের খুশির জন্য অন্যকে দুঃখী করা আমার স্বভাব বিরুদ্ধ। নিজেরটা যেমন বুঝি ভালো, নিজের ভালোলাগা, মন্দলাগা, খুশি, আনন্দ র মত অন্যেরটা ও ফিল করতে হয় ।আর এটা করলেই, আমার মনে হয়, বন্ধুত্বটা কোনদিন ভাঙতে পারে না। আমার এক ক্লাসমেট ছিল। খুব ইন্টেলিজেন্ট। নামটা ধরে নাও শ্রীমন্ত সেন। শ্রাবণীর সাথে গভীর প্রেম ফার্স্ট ইয়ার থেকে । ফাইনাল ইয়ারে এসে দুজনের ফাইনাল ডিসিশন।কেউ কারো সাথে কথা বলা নয়। । 'উই আর নট মেড ফর ইচ আদার 'যেমনটি ভেবেছিলাম শুরুতে! ব্যাস সব শেষ!

 ভাগ্যিস আগে ভাগে শেষ হয়ে গেছিল সম্পর্কটা! আর একটু এগোলে কী যে হতো বলা যেতনা!! কোর্টে যাওয়ার হুমকি ও দিয়েছিল শ্রাবণী।আমার কী মনে হয় জানো, যে সম্পর্কে চাওয়া-পাওয়ার নেশা নেই, সে সম্পর্ক স্বচ্ছ জলের মতো। সব তলে ই সমান ভাবে চলতে পারে। সকলকে স্পর্শ করে। তবে ধরা পড়ে না। তাই সব সময় সম্পর্কটা টিকে থাকে। জ্যোৎস্না রাতের মত। চিরকাল একই রকম। গেল মেল এ তোমার দুটো quiry ছিল। সহজ জ্ঞান  মানে কি? সহজ ভাবে বলি ।সিনিয়র অথবা টিচারের সাথে দেখা হলে আমরা গুড মর্নিং বলি। উইশ করি ।আমাকে কথা দিলে তুমি কথা রাখো। রেলিজিয়াসলি। কারো কাছে বই পড়তে নিলে ফেরত দাও সময় মত।অথবা কারো কাছে টাকা ধার নিলে টাকাটা ফেরত দাও ঠিক সময়। না দিলে তুমি বলে দাও কারণটা ।কী জন্য দিতে পারলেনা সময় মতো। এটাই সহজ জ্ঞান। বুঝলে? ৯৯ শতাংশ লোকের এটা অভাব। স্ট্যাটিসটিকস টা আটলিস্ট তাই বলে।  আমার মনে হয় সহজ জ্ঞানের অভাব থাকে বলেই মানুষ এত দুঃখী ভিতরে ভিতরে। তবু কত বানিয়ে বলে ,'ভালো আছি' মুখোশ পরা জোকারের মতো। ভালো থাকব বলে আমরা সবাই দৌড়াচ্ছি ।তবুও ভালো থাকতে পারছি না কেন! বাড়ি-গাড়ি ধনসম্পত্তি সব আছে। তবু প্রাণ খুলে হাসতে পারছিনা কেন! হাজার কেন র প্রশ্ন একটাই। সেটা সহজ  জ্ঞান। আশা করি বোঝাতে পেরেছি তোমাকে। টিচারের মত।  তোমার অ্যাক্যাডেমিশিয়ানএর মত। তবে আমি কোনটা অ্যাক্যাডেমিশিয়ান  না ইঞ্জিনিয়ার? এটা তোমার মত আমারও ক্রমশ প্রকাশ্য!!

 আবির।


৯ মার্চ

হ্যালো আবির,

 আবার সময় নিলাম ।তুমি ঠিক বলেছ। বডি পারমিট করলে ও মনটা পারমিট করে না সবসময় লেখার জন্য। যাকে normally আমরা মুড বলি। তুমি তো সব জানো ।তা ছাড়া মেয়েদের মুড নাকি ভগবানও ধরতে পারেনা! মানুষ তো দূরের কথা। মজা করলাম ।আচ্ছা আবির, তুমি ভগবান মানো? আমি ভয় পেলে ভগবান মানি! অথবা পরীক্ষার আগে। বাকি সময়ে ভগবানএর নামটাই মনে পড়ে না ।যদি ও মা বলে, ভগবান ছাড়া নাকি মানুষের গতি নেই ।

 আমি হ্যাঁ হ্যাঁ করি। কারো সেন্টিমেন্টে আঘাত দিতে মন চায় না।অ্যাটলিস্ট আমি তা পারি না। তোমার সহজ জ্ঞানটা বুঝলাম সহজ করে ।অনেকটা শিখলাম। বই নিয়ে ঠিক সময়ে বই অথবা টাকা নিয়ে ঠিক সময়ে টাকা ফেরত কেউ দেয় বলে আমার তো মনে হয় না!! তোমার ওই গুরুজী করতে পারেন বোধহয় । আমি মাকে একটা  সানগ্লাস কিনে দেবো বলে কতদিন ভুলে গেছিলাম। কথার দাম রাখাটা খুব ইম্পর্টেন্ট। এখন বুঝেছি। নইলে  নিজের কাছে নিজের গুরুত্ব টা কমে যায় ।নিজেকে সাধারণ লাগে বড় ।আর বেশীর ভাগ মানুষ তো মুখোশ পরে থাকে সারাক্ষন। যদিও অদৃশ্য থাকে সেটা ।ভাইরাস ,ব্যাক্টেরিয়ার মতো। নিজের টা  নিজে ও দেখতে পায় না । যদিও সবাই ব্যস্ত নিজের বেস্ট টা দেখাতে।  খারাপটা নয়। মুখে বলে ও।  বেশি বেশি করে। ফিফটি পার্সেন্ট ঠিক হলে তা অনেক ভালো। আমি আগে পুরোপুরি বিশ্বাস করতাম লোকের কথা। এখন তো ফিফটি পার্সেন্ট ও নয়। মনে হয় বয়সের সাথে অভিজ্ঞতা বাড়ে। আর অভিজ্ঞ লোকের কথা এজন্য শোনা দরকার কারণ  তারা সব সময় ঠিক তা  নয়। কারণ তাদের ভুল করার অভিজ্ঞতা টা অনেক বেশি ।ভালো থেকো। 


মুগ্ধা

No comments

FACEBOOK COMMENT