ছবিঃ দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়
লেখাঃ শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
হঠাৎ করে ঠিক হলাে পলাশ দেখতে যাব, তাই ঠিক হল পুরুলিয়া যাব। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে কাটতে চেষ্টা করলাম| অনেক চেষ্টা করে রাতের হাওড়া-চক্রধরপুর ফাষ্ট প্যাষেজারে টিকিট কেটে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। পশ্চিমবঙ্গের ২৩ জেলার মধ্যে পুরুলিয়া একটি |১৮৩৩ সালে জঙ্গলমহল কে ভেঙে বর্ধমানের কিছু অংশ ঝাড়খন্ডের ধানবাদ, দালভুম, সেরাইকেলান এবং খিরশেয়ান শহর মিলিয়ে একটি নতুন বড় শহর তৈরী হয় যার নাম মানভুম | ১৯৫৬ সালে মানভুম ভেঙে দেওয়া হয় বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। ১লা নভেম্বর ১৯৫৬ তে পুরুলিয়া শহরের জন্ম হয়। এখানকার গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলাের মধ্যে রয়েছে বান্দওয়ান,বলরামপুর,বাঘমুন্ডি,আদ্রা, ঝালিদা, কাশিপুর, রঘুনাথপুর |এই জেলার অর্থনীতি নির্ভর করে মুলত ৩টি বিষয়ের ওপর কৃষি, উদ্যোগ,আর টুরিজম প্রধান উদ্যোগের মধ্যে বিদ্যুত,স্পজ আয়রন প্রকল্প, সিমেন্ট, বাঘমুন্ডীতে প্রাকৃতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পর কথা বিশেষ করে বলতে হয়। এই রাজ্যের প্রায় ৭০,০০০লােক লাক্ষ্যা শিল্পের সাথে জুড়ে আছেন। পুরুলিয়া জেলার প্রধান পর্যটনের জায়গাগুলাে শহর থেকে প্রায় ৬০৭০ কি মিঃ দুরে। আমাদের হাতে সময় ছিল, মাত্র দুদিন। তাই মােটামুটি পুরুলিয়ার দর্শনীয় স্থান ও পলাশ দেখার জন্য গাড়ি বলে রেখেছিলাম| শ্রী আশুতােষ মাহাত ছিলেন এই দুদিনের সারথী।
পৌঁছে গেলাম পুরুলিয়া স্টেশান ভাের ৪-৪৫ মিনিটে। স্টেশন থেকে আশুতােষদা আমাদের নিয়ে গেলেন হােটেল আকাশ সরােবরে যেখানে আমরা সেইদিন থেকে বুকিং করেছিলাম। হােটেলের চেক ইন টাইম ছিল সকাল ৮-৩০ কিন্তু আমরা হােটেলে অনুরােধ করে ফ্রেশ হব বলে একটা রুমের ব্যবস্থা করে রুমে গিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নীচে নেমে ব্রেকফাস্ট করে ৮টার সময় গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়লাম পুরুলিয়ার পুর্বদিকে অর্থাৎ অযােধ্যা পাহাড়ের দিকে। আমরা দেখতে চললাম অযােধ্যা পাহাড়, ময়ূর পাহাড়,বহামনী ফক্স,আপার ড্যাম,লােয়ার ড্যাম, পাখি পাহাড়, চাড়িদা গ্রাম, লাখখা বন,খায়রাবেড়া ড্যাম মরগুমা ড্যাম প্রভৃতি। যেতে যেতেই আশুতােষদার কাছে জেনেছিলাম পুরুলিয়া তে ৬০%। সানতাল, ১৮% ভুমিজ, ৬% মুন্ডা,৭% শবর, ১% বিরহাের আর বাকি মাহাতাে প্রজাতির লােক বাস করে। মাহাতােদের সংখ্যা পুরুলিয়াতে প্রায় ৮লাখের মতাে| সানতাল প্রজাতির লােকেরা প্রধানত থাকে বাঘমুন্ডি, বিন্দোয়ান, বলরামপুর,আরসা ব্লকে| অযােধ্যা পাহাড়ে সড়ক পথে যাবার দুটি রাস্তা| একটি পুরুলিয়া শহরের দিক থেকে সিরকাবাদ হয়ে আর বরাভুম স্টেশন থেকে এলে বাঘমুন্ডি হয়ে। একটু এগুতেই পড়ল আমাদের আকঙ্খিত পলাশের বন। কি অদ্ভুত সেই দৃশ্য| সত্যিই প্রকৃতিতে যেন আগুন লেগেছে। আশুদার জানালেন এই পলাশ গাছের শেকড় মাটির নিচে দিয়ে যেমন যেমন যায় তেমনভাবেই ঐ শেকড় থেকে নতুন গাছের জন্ম হয়|এই গাছ সাধারণত ১২- ১৫ ফুট উঁচু হয়। কিন্তু সমস্যা হল যেখান দিয়ে এই শেকড় যাবে সেই অঞ্চলের জমিতে অন্য ফসল হয় না| ফুল ফোটার সময় শীতের শেষ থেকে বসন্তের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। মােটামুটিভাবে প্রায় ২৫ দিন। পুরুলিয়াতে পলাশ ছাড়াও শিমুল, রূদ্রপলাশ, মাদার ছাড়াও একটি বিশেষ প্রজাতির গাছ পাওয়া যায় যার পাতা ঠিক এইসময় নতুন করে জন্ম নেয় যার রং লাল এর নাম কুসুম। এরজন্য পুরাে গাছটাই নীচে থেকে ওপর অবধি লাল লাগে। অযােধ্যা পাহাড়ের রাস্তাটা নীচে থেকে ওপর পর্যন্ত পাহাড়ের গা দিয়ে এঁকে বেঁকে উঠে চলেছে। এখানে একটা জায়গা আছে যার নাম এস পয়েন্ট যেখান থেকে নিচের ঐ সর্পিল রাস্তা দেখতে অনেকটা S এর, খুব সুন্দর একটা খুব বলার মত কথা মনে পড়ে গেল, এখানকার পােশ্য জন্তুরা ধরুন, ছাগল, গরু, মুরগী যদি রাস্তায় বসে থাকে তাহলে আপনাকে গাড়ি থেকে নেমে তাদের একপ্রকার অনুরােধ করে রাস্তা খালি করাতে হবে। নাহলে তারা রাস্তার মাঝেই বসে থাকবে।
অযােধ্যা
পাহাড় হল দক্ষিণ বঙ্গের সব থেকে উঁচু পাহাড়, উচ্চতা প্রায় ২০০০ফুট। এটি
দলমা পাহাড়ের ও পূর্বঘাট পর্বতমালার একটি সম্প্রসারিত অংশ। অযােধ্যা
পাহাড়ের উচ্চতম শৃঙ্গটি হল গােরগাবুরু বাঘমুন্ডি এই পাহাড়ের নিকটস্থ একটি
শহর নিকটবর্তী রেলস্টেশন বলরামপুর | এই পাহাড়ের শৃঙ্গটি একদম টেবিলের
মতাে সমতল। এখানে ভারত সেবাশ্রম সংঘ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রম ছাড়াও কিছু
পান্থনিবাস ও ইয়ুথ হস্টেল আছে। বাসে যদি আসেন, তাহলে এখানেই রাতে থেকে
অযােধ্যা পাহাড়ের বাকি কিছু যায়গায় পায়ে হেঁটে দেখে নেয়া যায়।
পৌরাণিক মতে রাম-সীতা বনবাসে থাকার সময় এই পাহাড়ে এসেছিলেন। সেই সময়
সীতার তৃষ্ণা মেটাতে শ্রীরাম ওই অযােধ্যা পাহাড়ে তীর মেরে জল বার করেন।
তাই পাহাড়ের ও জায়গার নাম – সীতাকুণ্ড। প্রচন্ড গরমে যখন এখানকার কুয়াে
এবং নলকূপ শুকিয়ে যায় তখনও এখানে জল পাওয়া যায়। আসলে এটা একটা আর্টেজিও
কুপ৷ এছাড়াও এই এলাকায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক জলাশয় দেখা যায়, যার কোন
উৎসের খোঁজ পাওয়া যায়নি এবং এইসমস্ত জলাশয়ের প্রচন্ড গরমেও জল শুকিয়েও
যায় না ।
আমরা এগিয়ে চলি ময়ূর পাহাড়ের দিকে। আগে অযােধ্যা
পাহাড় ছিল ঘন জঙ্গল,, তখন এই পাহাড়ে অনেক ময়ূরের ছিল, পাহাড়ের গর্তে
তারা ডিম পাড়ত। সেই থেকেই পাহাড়ের নাম ময়ূর পাহাড়। এখন কালের প্রবাহে
গাছপালাও আর নেই তাই ময়ূরও নেই, তবে এই পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত, এবং নীচে
সুন্দরী অযােধ্যার সবুজ মনােরম দৃশ্য অবিস্মরণীয়। এখান থেকে সামনে তাকালে
খােদা ডুংরি, সাটু ডুংরি সহ প্রায় ৭২টি টিলা চোখে পড়ে। এখান থেকে চললাম
মার্বেল লেক|ময়ূর পাহাড় থেকে বাঘমুন্ডির রাস্তায় আপার ড্যাম যাবার আগে
বাঁ দিক দিয়ে কিছুটা শালবনের মধ্যে গেলেই পড়ে মার্বেল পাথরের খাদান।
চারপাশে উঁচু উঁচু পাথরের টিলার মাঝে নীল জলাশয় অপুর্ব। এখান থেকে আরাে
কিছুটা দুরেই বামনী ফলস| এই ফলসটিকে ঠিক মতাে দেখতে পাহাড়ের গায়ে কাটা
পাথরের সিড়ি প্রায় ৭০০_৮০০টা নীচে-ওপর করতে হয়। তবে পুরােটা দেখতে
প্রায় ৩০ তলা নীচে নামতে হবে যার রাস্তা খুবই দুর্গম। এখান থেকে ফিরতি পথে
চললাম আপার ড্যাম হয়ে লােয়ার ড্যাম | এই দুই ড্যাম থেকে জলবিদ্যুৎ
উৎপাদন হয় তা পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। জানলাম আগে এই পাহাড়ের
চিতাবাঘ, হায়না, বুনাে কুকুর, বুনাে শুয়ােরের দেখা মিলত, এখন শহরীকরনের
উদ্যোগে শুধুই গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায় না।
এখান
থেকে পাখী পাহাড় যাবার মাঝে আমরা লাঞ্চ করলাম|অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার, মাছ
ভাত ডাল তরকারি চাটনি, সব কিছু দিয়েও দাম খুব বেশী না। নাম শুনে মনে হয়
যে পাখী পাহাড়ে বুঝি অনেক পরিযায়ী পাখী দেখা যাবে। কিন্তু এখানে দেখা
যায় পাহাড়ের গায়ে অনেক উড়ন্ত পাখির ছবি| পাহাড়ের গায়ে এনামেল
পেইন্টিং সাহায্যে প্রখ্যাত শিল্পী চিত্ত দে ১৯৯৭সাল থেকে ২৪ জন আদিবাসীকে
সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেন। এখানে ৬৫টি পাখির ছবি দেখা যায় যার মধ্যে
সবচেয়ে ছােট ডানার লম্বাই ৫৫ফুট এবং সবচেয়ে বড় ডানা ১২০ ফুট লম্বা। এই
পাহাড়ের পুরানাে নাম ছিল মুরা বুরু যার উচ্চতা ৮০০ ফুট।
এখান
থেকে আমরা এগিয়ে চললাম খয়েরাবেরা ড্যাম দেখতে যাবার পথে আমরা গেলাম
চারিদা গ্রামে। যেটা আসলে ছৌ গ্রাম নামেও খ্যাত। এখানে ছৌ নৃত্য শিল্পীদের ও
তাদের মুখােশ ও পােশাক তৈরির কারিগরদের সাথে আলাপ হল| কাগজের দিয়ে
মুখােশগুলাে তৈরি করে তারপর রং ও আনুসঙ্গিক উপকরণের সাহায্যে বিভিন্ন
দেবদেবীর মূর্তি গড়ে তােলার এক মনােরম দৃশ্য। এখান থেকে খয়েরাবেরা ড্যাম
যাবার পথে পড়ল লাখখা গাছের বন| এখান থেকে আমরা চললাম আজকের শেষ গন্তব্য
মরমা ড্যাম। এখানে একটা কথা বলা খুব দরকার যে পুরুলিয়া একটি পাহাড়ি এলাকা
তাই এখানকার কৃষকরা প্রথমে এক ফসলি চাষের উপর নির্ভর করতেন। কিন্তু
বর্তমানে এইসমস্ত ড্যামের সহায়তায় পুরুলিয়ার কৃষকরা এক ফসলির জায়গায়
দুই থেকে তিন ফসলি চাষাবাদ করছেন। এই মরমা ড্যাম থেকে সূর্যাস্ত দেখে
পুরুলিয়া ফেরার পথে আমাদের খুব চা তেষ্টা পায় এই বলতেই আশুতােষ দা একটি
দোকানে গাড়ি থামান। সেখানে চায়ের সঙ্গে একটি নতুন বাজারের মধ্যেই যাত্রা
পালার আসর বসেছে। দোকানি,খরিদ্দার, রাস্তাতেই বসে পড়েছে, গাড়ি যাবার জন্য
পথ করে দেবার তাদের মােটেই দায় নেই। আসলে কারাে মধ্যেই তাড়া নেই একটুও।
প্রায় ৪৫ কি মি রাস্তা প্ৰদুষনমুক্ত আবহাওয়ায় রাতের পরিস্কার আকাশে
তারাদের দেখতে আমরা হােটেলে পৌঁছুলাম।
আমাদের হােটেল টা খুব সুন্দর ছিল, জানলা দিয়ে দেখা যায় একটা সুন্দর লেক,
তাতে নানা পাখীর আনাগােনা। পরদিন সকালে তৈরী হয়ে ব্রেকফাস্ট শেষ করে
হােটেল থেকে চেক আউট করে আমরা আবার আশুতােষদার গাড়ি চড়ে পুরুলিয়ার
পশ্চিমদিকে রঘুনাথপুর সার্কেলের দিকে বেরিয়ে পড়লাম জয়চন্ডী পাহাড়,
গড়পঞ্চকোট, বড়ন্তি, ঝালদার উদ্দেশ্যে। যদিও প্রকৃত উদ্দেশ্য পলাশের মজা
নেওয়া শহর থেকে বের হয়ে আমরা পুরুলিয়া-বরাকর রােড ধরে চললাম রঘুনাথপুরের
দিকে। বেশ কিছুদুর এগুতেই দিগন্ত বৃস্তৃত প্রকৃতির আগুন রং আর্থাৎ পলাশের
বন। কি অপরূপ শােভা,মন ভরে গিয়েও যেন অতৃপ্ত ছিল, মনে হচ্ছিল যেন আরও চাই।
আরাে এগুতেই দেখতে পেলাম পলাশের নতুন প্রজাতি রূদ্রপলাশ কি অদ্ভুত তার রং।
এগিয়ে চলি গড়পঞ্চকোটের দিকে। জনশ্রুতি আছে দামােদর শেখ নামের এক রাজপুত
ব্যক্তি
স্থানীয় পাঁচ আদিবাসী সরদারের সাহায্যে এই পঞ্চকোট রাজ্যের স্থাপনা করেন।
পাঁচ গােষ্ঠীর সাহায্যে গােড়ে ওঠা বলেই একে পঞ্চকোট বলা হয়। পাহাড়ের
গায়ে একটা সরু রাস্তা আছে ট্রেকিং করার জন্য। এই পথে ৫-৬ ঘন্টা ট্রেকিং
করলে পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়া যায়। এখানে বর্তমানে একটি রাসমন্দির আছে।আর
সাত রানীর জন্য তৈরী রাজবাড়ীর ভগ্নস্তুপ|তার পেছনে বনবিভাগের সার্কিট
হাউস|বরাকর পুরুলিয়া রােড থেকে যে রাস্তাটা এঁকে বেঁকে গড়ের দিকে গেছে।
সেদিকে একটু গেলেই চোখে পড়ে একটা সাইনবাের্ড যাতে লেখা ছিল ।
"পিন্ডারে
পলাশের বন,পলাব পলাব মন" | তার কিছুটা দূরে গেলেই ডানদিকে পড়ে এই
রাসমন্দির| এখান থেকে গেলাম পাঞ্চেত ড্যাম ঝাড়খন্ডের পাঞ্চেতে দামােদর
নদের ওপর এই ড্যাম|১৯৫৯ সালে এই বাঁধ তৈরি হয়েছে। এখানে ৮০ মেগাওয়াট
বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও মৎস্য চাষ হয়। এখান থেকেও গড়পঞ্চকোটে যাবার রাস্তা
আছে। এখান থেকে আমরা এগিয়ে চললাম বড়ন্তি লেকের দিকে। রামচন্দ্রপুর
সেচপ্রকল্পের আয়তায় আসা এই জলাশয়ের পােশাকী নাম রামচন্দ্রপুর জলাশয়
হলেও লােকে একে বড়ন্তী লেক বলেই চেনে। এর একপাশে আছে মুডি পাহাড়। এখানে
পৌঁছাতে পৌঁছাতে হয়ে গেছিল দূপুর ২ টা সকাল ৭-৩০ এ বেরিয়ে পলাশ ও বাকি
জায়গাগুলাে দেখতে দেখতে কখন যে পেটে খিদে ডন মারছিল বুঝতে পারিনি। আশুতােষ
দাকে বলতেই বললেন তে আমরা বড়ন্তি গ্রামে খাব। কিন্তু বিধি বাম কারণ
শহরীকরনের প্রচেষ্টায় সেখানে রাস্তা তৈরি হচ্ছিল। ফলে আবার প্রায় ৫০ কি
মিঃ দুরে রঘুনাথপুর শহরে ফিরে আসতে হল। এখানে খাবার খুব ভালাে থালি
সিস্টেমের। এখান থেকে চললাম জয়চন্ডী পাহাড়ের দিকে। এটা পাঁচটি পাহাড়
নিয়ে গঠিত। এরা হল যােগীটাল, চন্ডী, ঘড়ি, সিজানাে, রাম-সীতা প্রভৃতি। এই
জয়চন্ডী পাহাড়ে আমাদের হীরক রাজার দেশে ছবির গুপি বাঘার স্মৃতি ছড়িয়ে
আছে। এখানে পাহাড়ের নীচে একটা বড়াে মাঠ আছে সেখানে সত্যজিৎ রায়ের নামে
একটি মঞ্চ বানান আছে। প্রতিবছর এখানে মেলা হয়। পাহাড়ের গা দিয়ে ট্রেকিং
করে ওপরে উঠার যায়। সেখানে মাথা চন্ডির মন্দির আছে। কিন্তু সময়ের অভাবে
আমাদের এগিয়ে চলতে হল আদ্রা স্টেশনের দিকে, কারন আমাদের ফেরার ট্রেন রূপসী
বাংলার সময় হয়ে এসেছিল। অনেক দুঃখ রয়ে গেল অনেকগুলাে দর্শনীয় জায়গা
দেখা হল না বলে আর দুঃখ রয়ে গেল রাঙামাটির দেশে গিয়ে খুব কম রাঙামাটির
দেখা পেয়ে হয়ত শহরিকরন ই তার প্রধান অন্তরায়। আবার আসতে হবে এই ইচ্ছা
নিয়ে ফিরে চললাম।
Post a Comment