DEHLIJ

পীযূষকান্তি বিশ্বাস

 ঝান্ডেবালান


 

 ১

এই যে অনতি যাতে ঢিল ছোড়া যায় ।
চোখে খুন উঠে আসে ।
ধুলোর স্তরে কারো ব্যর্থতা  জমেছে ।  
রক্ত পিয়াস নিয়ে আসে চৈত্র চরিত্র ।  
কেকাকে সরিয়ে কারোলবাগে ফুলে ওঠে ভোর ।
কারো বুকে বুঝি শক্তি-শেল বিঁধেছে ।
শুষেন , শুষেন - বিশল্যকরণীর স্বাদ কী ?
খুনকে অতিক্রম করে যাচ্ছে খুন ।  
খুনি অভীপ্সা থেকে ভক্ত হওয়া শ্রেয় ।
উচ্চতায় থেকে তাই নিয়েছি জমির দখল ।
এই যে পবন, কোথায় গেলে গন্ধমাদন পাবো ।
লালমাটি কেটে চরাচরে বসেছে আরাবল্লি ।
ফাগুনের আকুতি নিয়ে বুদ্ধ-জয়ন্তী ।
তবু কেউ যেন মৃত্যুশয্যায় ।
মহল্লায় মহল্লায় কাহাদের কান্না ।
ঝান্ডাবালান এমুহূর্তে ভীষণ ভাবে তোমাকে চায় ।

হে হনুমান, ভিতমাটি ছেঁড়া লম্ফন চাই ।
চাই তোমার দীর্ঘ উড়াল ।



এই উড়াল কোথায় যায় ?
তুমি তো তীরন্দাজ নও ।
নজর কে সামনে, বক্ষের খুব কাছাকাছি ।
দিল্লি চরিত্রে তুমি এনেছো ব্রহ্মচার ।
সবাই নিজের মন্দিরে ফিরে গেছেন ।
অথচ পূজিত হবার আগে মহান হবার কথা ছিলো ।
দেবতা পাথর - নাকি পাথর দেবতা  ?
হে পবনপুত্র , সেই সঞ্জীবনী কোথায় ?
কোথায় দৃশ্যাবলী ?
প্রতিমায় ভক্তি আছে ,  জিগর কই ?
হে ব্রহ্মচারী - তোমার অসাড়তা বুঝি ।

শঙ্কর রোডে চক্রাকারে ঘুরে আসে যে মারুতি হোন্ডাই  
গোলচক্করে কি আফসোসের সঙ্গে
আজ তার নাম্বার প্লেট পড়ো  ।

 ৩

তুমি না হনুমান ? সূর্য ছিঁড়ে আনতে পারো ।
অনায়াস লম্ফনে পার হয়ে যাও লংকায় ।  
কাঁঠালকাননে লুকিয়েছও মন্ত্রমুগ্ধতা
পাষানবেদীতে আটকে রেখেছো পা ।  
নাকি বদ্ধ থাকতে চেয়েছো নিজের কমফোর্ট জোনে ?
উত্তরাধিকারে পেয়েছো উদাসী পবন ।
ভিতরে রাম, বাইরে ঝান্ডাবালান ।
তুমি ভক্ত থাকতে চেয়েছো যখন
করোনা একটি জড়  মাত্র ।
গঙ্গারাম কোন পাত্র নয় ।
তুমি কোন বুদ্ধ নও ।

পূর্ণিমা ফিরেছে যখন কারোলবাগে, হে ব্রহ্মচারী,  জেনো
তোমার অপেক্ষায় নেই কোন সুজাতার পায়েস ।
   



এইভাবেও ঘুরে আসে রাজধানী ।
বার আস্টেক ফুঁড়ে ওঠা রাইসিনা হিলস ।
তোমার মূর্তির পাশাপাশি আজ আমারও ।
দৃশ্যবহির্ভূত সেই দৃশ্য-কোলাজ, তুমি এইসব দ্যাখোনি ।

রামরাজত্বে সবাই স্ট্যাচু ।  
প্রেমিকযুগলকে তবু ডেকেছে বুদ্ধাগার্ডেন ।
স্থানিকতার দাঁত দিতে পারি ।
চোখ টিপলেই সুরভিত চন্দনের বন ।
অনন্তমালীর দুচোখে যতদূর ফাল্গুন দেখি   
অ্যাসফল্ট তোমাকে শুধুমাত্র অবয়ব দিয়েছে ।  
আরাবল্লির থেকে মহান কিছু নও ।
জলবায়ুর থেকে মহান কিছু না ।
 
আমার ভাইয়ের বুকে শক্তিশেল বিঁধে আছে  ।
সময় বড়ই প্রতীক চিহ্ন মাত্র ।
মহল্লার পর মহল্লায় যখন নেমেছে কান্নার ঢল 
এই বিকেলে পুসা রোড জুড়ে পিপাসিত চৈত্র আগুন লাগিয়েছে
হে পবনপুত্র যদি অন্ততঃ দুই ফোটা কাঁদতেও পারতে,  
কিছুটা আগুন নেভানো যেতো ।




   





3 comments:

  1. "রামরাজত্বেে সবাই স্ট্যাচু"❤

    ReplyDelete
    Replies
    1. https://yatradham.org/blog/hanuman-mandir-jhandewalan/

      Delete
  2. Bhishon sundor images..loved reading

    ReplyDelete

FACEBOOK COMMENT