তুলসী কর্মকার
একটা রাত বসে আছে
শরীর ঘুমে আচ্ছন্ন
চারিদিক নিস্তব্ধ
জল জলের মধ্যস্থ পথ
সামনের দিকে এগিয়ে চলছে
হাওয়া নেই দম বন্ধ
উপর ওঠা যাচ্ছে না
ঘাড় চেপে ধরেছে
ইচ্ছে অনিচ্ছের তড়িঘড়ি
অকস্মাৎ ঘুম উধাও
বিছানা শুষ্ক বুক ধক করে
জীবন দেখে উদাসী শরীর গড়াগড়ি খায়......
উদাসীন অঞ্চল
বদনে মানুষ মোটিভযুক্ত তরল ধাতু
উপরিভাগে জব ইউনিফর্ম চড়ালে চুম্বক হয়
যতক্ষণ স্যালারি প্রবাহ চলে
দুটি মেরু
একটি মায়া অপরটি নেশা
পাশাপাশি স্বামী স্ত্রী যখন একই ইউনিফর্মে থাকে
সমঅক্ষে কিছুটা বিপর্যয় নামে
দিক হারিয়ে উদাস
বিপরীতে মায়া নেশাকে নেশা মায়াকে জড়িয়ে ধরে
সন্তান দিশেহারা......
মনোনিবেশ
এক সময়
মন
আকাশে উড়তে উড়তে
ডানা খসিয়ে দেয়
এক সময়
স্বপ্ন
রানওয়ে খুঁজতে খুঁজতে
সকাল দেখতে পায়
এক সময়
মন স্বপ্ন
আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা
সমান্তরাল রেখা
এক সময়
চলতে চলতে স্ত্রী
লাল বাতিতে সন্তান
জীবন ড্রাইভার সিটে তাসেদের দাস হয়ে যায়...
নারীবিধি
গাছ তাঁকে জিজ্ঞেস করে
তুমি মা হতে চাও?
সম্মতিতে ঘাড় নাড়ে
ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ হয়।
তারপর বীজ থেকে গাছ
গাছে ফুল ফোটে।
ফুলমতি প্রশ্ন করে
তুমি বাবা হতে চাও?
গাছ নিরুত্তর
জবাব দাও।
আমি সন্তান স্নেহ জানি না
উদ্দেশ্য কেবল তোমাতে সুখ খোঁজা।
ফুলমতি লজ্জিত হয়
বিধেয় পর্বে মাগির ভেতর মা লুকিয়ে রয়।
প্রবাহ
ক্রমশ ঠাণ্ডা রাত
ফালি চাঁদ আকাশে
একলা মজে ছাদ
হিম কুড়িয়ে সান্দ্র
ঈশানকোণে মাঠ
শিয়াল ডাকে
ঝিঁঝিঁ গর্জন
অপেক্ষারত পেঁচা
উষ্ণতা খোঁজে মন
ঋতুঘরে বউ
নৈশভোজ শেষে নিপাট ভদ্রতা
রবিরাত ধরে সময় চলে যায়......
শব্দমৈথুন
স্কুটি আবদ্ধ সিম্ফনি
স্মার্ট যুবতী ড্রাইভরত ক্যানভাস
নয়নাভিরাম নিয়তি।
একটি তুলি মুখ গড়ে
নাক চুল ঠোঁট গাল
দেখে চোখ......................
একদল বুক মাপে
ভলিউম চুড়া শক্ত নরম
অনুযায়ী অনুভব...................
কল্পনার অন্তরীক্ষে একটি আমি নিমজ্জিত
পূর্বাভাস জঙ্গলমহল রঙ্গশালা মধুমঞ্চ
লব্ধ রসায়ন........................
ভীষণ!
অতিশয় দুর্দান্ত
নৈঃশব্দ্য রমণ আঁকে মন.......................
ক্লাসঘর
আর্টিস্ট আঁকছেন
কলা
মদের গেলাস
বেখেয়ালি যুবতী
ঢেউ খেলানো কাপড়
এরপর আদেশ মতে
চোখ বন্ধ
ক্যানভাসে হাত রাখি
ভায়ের টিফিন, বাবার ড্রিংক, মায়ের কাপড় ছাদের রক, কপাট ফাঁকে দিদির স্নান
বর্ণ গন্ধ উষ্ণতা উপলব্ধ হয়......
সমবেত বাউল
হিমেল রাত
মিনমিনে গুটিকয় তারা
খামোশি রন্ধ্রে শব্দ ভরপুর
সন্তোষ সূচক উঠা নামা করে
স্বপ্ন ঘুরে বেড়ায়
সক্রিয় আঙুল
ইঁদুর কৌণিক ব্যস্ততায়
অঙ্ক কষে পেঁচা
হয়ে যায় আমের ভাগ
পক প্রণালীতে আম পাড়ে যুবক
শ্রম
নাকাল
গলগলে রস
খোসার দূরাবস্থা
এসব অবশিষ্ট উপরি পাওনা
বিভাজন আঁঠির ভিতর স্বপ্ন ধরে খায়......
বসন্ত বেলা
বিকেল ঘনিয়ে এল
রাঙা মাঠে বেলাশেষ
খেলাছলে দোলাচলে
বরসাজে বউখোঁজ
জল্পনা কল্পনা আলপনা ভাস্কর
ঠকঠক টোকাতে মন করে সড়সড়
উৎসুক লাঠিয়াল হাঁকদেয় ডাকদেয়
ইশারায় কবলিত আমার টিনেজ
ভাবভাষা নাকিসাজ অজুহাতে মিছেলাজ
তাক বুঝি ফাঁক খুঁজি শিহরণ ডাকে আয়
গোয়াল গোপন
ছানি ভরা দন
মনে আলোড়ন
মাংস দণ্ড নাচে
ভয়েভয়ে বুক করে ধুকপুক
কৌশল ধরেহাল ঘাড়েঠোঁট পেটেহাত
সুরকি মোচড় খায় নেশালাগা আওতায়
সন্ধিতে ডুব দিতে হেলে যায় দুলে যায়
ভিজে লাগে ব্যাথা জাগে
আরো চাই আরো চাই......
উৎসর্গ
দু কথা যাপন আঁকতে হৃদিক্ষয়
সেখানে লুক্কায়িত ঘোড়সওয়ার
কালো ছাগল ছাল হারিয়ে ঝোল বাটি উচ্ছিষ্ট
শীত আভায় হাড় চিবাচ্ছে কুকুর
অল্প দূরে যাবর শোনা যায়
হালাল প্রহর অঙ্ক কষে
হাঁক দেয় চলমান প্রেম
আত্মসুখ বলিরেখায়
রক্তপাত ঘটে
মানবতা ম্যানিপুলেশন ল্যাম্পপোস্টে বাঁধা ঈশ্বর..
চাঁদ থেকে দেখা
চাঁদের আকাশে সূর্য উঠে
পৃথিবী হয়ে উঠে চাঁদ
গ্রহণ হয় গ্রাস করে সূর্যকে
কলা আছে আছে মন্ডল
জনগণ ধোঁকা খায়
চাঁদ ডুবে যায় অন্ধকারে।
দেখা যায় হর্ষুক্ত
গহ্বর আছে
সারদ নারদ গোলাপ ভ্যালি
আছে কমিশন প্রহর
রামরহিম নীরব
চাকা ঘুরে মায়াপিসি চরকা কেটে যায়।
সুখাতুর
১
তুমি এলে
খিলখিলিয়ে উঠে মন
রাঙা বিকেল গড়িয়ে যায়
লুকোচুরি ভালোবাসা গর্জে উঠে।
২
বললে
অভুক্ত আজও
প্রত্যাশিত রসায়ন কলা
সঙ্গোপনে সংগ্রহ করতে চাও।
৩
অতীত এসেছে
প্রতারিত আজ বর্তমান
অন্তিম পৃষ্ঠায় অনুশীলনে রমণ
অঙ্ক মাঝে উত্তর সুশোভন হতে চায়।
বোল
আঙুল খেলা করে
ষড়জ ঋষব গান্ধার মধ্যম পঞ্চম ধৈবত ও নিষাদ কাঁদে
আলো ভাঙা সপ্তক
একুশ জোড়া ক্রোমোজম
বিন্যস্ত কড়ি ও কোমল
আছে উদারা মুদারা তারা
হৃদয় এবং রেণু নেই
আঙুলের ইশারায় জব্দ
মন্দ্র মধ্য তার
ভাঙছে গড়ছে বলছে নানা কথা।
ক্ষরণ
স্বতঃস্ফূর্ত হাঁস
বৃষ্টির শব্দে চঞ্চু নাড়ছে
জেগে উঠছে মুখরোচক চাহিদা
লালা ঝরছে পিচ্ছিল ঠোঁট।
ক্ষুধার্ত সাপ
খাবারের খোঁজে চঞ্চুর সীমানায়
মাথা ভাইব্রেট হচ্ছে সাপ নাছোড়
চঞ্চুর ফাঁক ধরে ঢুকছে
কামড় খাচ্ছে কচ কচ শব্দ
বমি হচ্ছে পেট ভরছে লেতিয়ে পড়ছে।
গাছ কথন
ঝড় উঠে সান্ধ্য জুড়ে
স্বপ্নবীজ ডানা ঝাপটায়
রসনেন্দ্রি উদগ্রীব
দেহময় শিহরণ
ধ্রুবক তুমি
সাজতে থাক সমীকরণ।
সন্ধি রন্ধ্র শব্দ করে আলো হয়
পাহাড় চূড়া কাঁপে
সমাধান ছড়িয়ে অবশ বিটপী
বিবিধ ভগ্নাংশ ধারা রূপ লয়
পাদদেশ সুখ
ধ্রুবাঙ্ক সমীকরণে ধ্রুপদ হতে চায়।
কাবেরীর মোহনা
১
উৎস
প্রবাহযানে তুমি এলে
অভুক্ত অবিভক্ত আমি।
২
বিবাহযানে
অভিযোগ ব্যক্ত কর
আঘাতে চওড়া শরীর।
৩
বার্ধক্য
তুমি শিথিল
আমি ঢিলেঢালা।
নারীবিধি, ক্লাসঘর, শব্দমৈথুন - অসাধারণ প্রকাশ
ReplyDeleteপ্রাণিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ
Deleteঅসাধারণ
ReplyDeleteআপনাকে ধন্যবাদ
Delete