মনোজ দে
লেন্সের আড়ালে
তালপাতার
টুপির ফাঁক দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রোদ এসে পড়ছে মুখের উপর। তোমার ঠোঁটে
সেসমস্ত রোদের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায়। আরও জৌলুস। এইসব মুহূর্ত
ক্যামেরাবন্দী করছে, তোমার প্রিয় বান্ধবীর দাদা। দীঘা বেড়াতে এসেছ।
শীতকালের ফ্যামিলি ট্যুর। মোহনার উপর, তোমাদের হেঁটে যাওয়ার স্লো-মোশান
ভিডিও দেখেছি। ওটাই ছিল শেষ কনভারসেশন, আমাদের। অন্তত দুঘন্টা টানা দেখার
পর, বের করি, আরও নিখুঁত হতে পারত, অভিনয়। শেষ দৃশ্যে যখন ক্যামেরা থেকে
ছিটকে যাচ্ছ দুজনে দুইপ্রান্তে। ফিরে তাকালে কেন? এই একটা খুঁত আমায়
ঘুমোতে দেয়নি। এই অলস দুপুরেও বারবার মনে হয়েছে, ফোন করি। জানানো দরকার
তোমায়। পরক্ষনেই মনে হয়, হয়ত তুমি ভেবেছিলে ওটা শেষ দৃশ্য নয়। হয়ত,
তোমারও উপলব্ধি হয়েছে, বিচ্ছেদ। হয়ত, ফিরে তাকানোর যন্ত্রণা নিয়েই তুমি
ফের সমুদ্রে যাচ্ছ। ঢেউ আসে। বান্ধবী টেনে নিয়ে যায় সমুদ্রে। চিৎকার করে
ওঠো, ঢেউয়ের থেকেও জোরে। বান্ধবীর দাদা ছুটে আসে। হাত ধরে টেনে নেয়।
হাঁপিয়ে ওঠো। তারপর বাকি ট্যুর জুড়ে, সমস্ত ট্যুর জুড়ে, পড়ে থাকে তোমার
সমুদ্র থেকে উঠে আসার দৃশ্য, দীর্ঘশ্বাস
ফুল
তখনও
জানা হয়নি বাগানের ইচ্ছে। সরু বারান্দায় সারি সারি গাছেদের শৈশব। তুমি
সেই আদরের ছবি তুলে আনো সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভাবি, কতটা অচেনা ছিল পৃথিবী।
ভাবি, বৈপরীত্যের কথা। ভাবি, একটা কংক্রিটের ভেতরই দেখা হত রুটিনমাফিক।
দরজা খুলে এলেই আলিঙ্গন। কিছুক্ষণ নীরব থাকা। চুলের ঘ্রাণ এই নীরবতা আরও
দীর্ঘ করে। বুকের কাছে কথা বলো। আবহে বাজে সেই গান। সলিল চৌধুরী আমার
প্রিয়। তোমার সম্ভব রাহুলদেব। কত সন্ধ্যা শুনেছি দুজনে। কেউ যেন নব
ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাঝে মাঝে আরও স্পষ্ট করে তোলে। আমি তার হদিশ পাই না। তুমি
মৃদু হতেই ছুটে যাই। এমনই বইমেলায় হঠাৎ সামনে, তোমার ইতস্তত মুখ। আবহে কি
গান বেজেছিল সেদিন? সেই মগ্নতার নব হারিয়ে ফেলেছি। এখন আবহে কোনও গান
নেই, নেই তোমার চুলের ঘ্রাণ
দুটিই বড় সুন্দর
ReplyDelete